ফুসফুসে বাতাস জমা কি হুমকিস্বরূপ?

শ্বাসতন্ত্রের একটি মৌলিক অঙ্গ ফুসফুস। আমাদের নিশ্বাস প্রশ্বাসের পরিচালনে ফুসফুস সহায়তা করে। তাই ফুসফুসে বায়ু প্রবেশ মানবশরীরের অপরিহার্য। তবে এই অপরিহার্য উপাদানটি অনেকের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের ফুসফুসে সাধারণত অনেক ছিদ্র থাকে, যার মাধ্যমে বাতাস চলাচল করে। তবে অনেকের ফুসফুসে তুলনামূলক বড় ছিদ্র বা গহ্বর তৈরি হয়। এই গহ্বর মানুষের শরীরে অক্সিজেনের প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করে। বাধা পাওয়ার কারণে মানুষের শরীরে স্বাভাবিকের থেকে কম অক্সিজেন প্রবেশ করে, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

ফুসফুসে ছিদ্র বা বুলা হওয়ার কারণ

ফুসফুসে অগণিত ছোট ছোট বাতাসের থলি রয়েছে। এই থলিগুলো যদি অকেজো হয়ে যায়, তখন ফুসফুস থেকে অক্সিজেন রক্তে যেতে বাধাপ্রাপ্ত হয়। ফলে মানবশরীর ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ফুসফুসে বাতাস জমতে জমতে তা বেলুনের মতো আকার ধারণ করে, যাকে ‘বুলা’ বলা হয়। এই বুলা বা ফুসফুসে সৃষ্ট গহ্বর ফুসফুসকে ধীরে ধীরে অকেজো করে ফেলে। ফুসফুসের থলি অকেজো হলে- মানুষের স্বাভাবিক শ্বাস প্রশ্বাস বাধাগ্রস্ত হয়, ‘বুলা’ ফুসফুসের সক্রিয় অংশে আঘাত হানে, বুলা হলে ধীরে ধীরে বাতাসের এই থলিগুলি বড় হতে থাকে, যা এক সময় অনেক বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। থলিতে জমা বায়ু নিষ্কাশিত হওয়ার কারণে ধীরে ধীরে ফুসফুসের কার্যকারিতা হ্রাস পেতে থাকে। ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি) আছে এমন রোগীদের ফুসফুসে সাধারণত এমন সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া ধূমপায়ী অথবা দীর্ঘ সময় ধোঁয়ার সংস্পর্শে থাকা মানুষদের ফুসফুসে বুলা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

ফুসফুসের ছিদ্র বেড়ে গেছে কিনা বোঝার উপায়

ফুসফুসের ছিদ্র বেড়ে গেছে কিনা তা সহজে বোঝার উপায় নেই বললেই চলে কারণ এর নির্দিষ্ট কোন উপসর্গ পরিলক্ষিত হয়না। এটি মূলত ফুসফুসের স্ক্যান করলেই ধরা পড়ে। তবে কাশি, অতিরিক্ত থুতু উৎপাদন, নিঃশ্বাসের দুর্বলতা, আঙ্গুলের ডগা এবং ঠোঁট নীল বর্ণ ধারণ করা, ক্লান্তি বেড়ে যাওয়া এ সবই ফুসফুসজনিত সমস্যার লক্ষণ। 

ফুসফুসের ছিদ্র অপসারণের পদ্ধতি- বালেক্টোমি

ফুসফুসের এই গুরুতর রোগ ‘বুলা’ নিরাময়ের জন্যে বালেক্টোমি সার্জারি করা লাগে। তবে সৌভাগ্যবশত সবার এই সার্জারি করা প্রয়োজন পড়েনা। রোগীর শারীরিক অবস্থা, গহ্বর কতটা বড় এবং এমন গহ্বর ফুসফুসের কোথায় সৃষ্টি হয়েছে তার উপরে সার্জারির আবশ্যকতা নির্ভর করে। ফুসফুসে সৃষ্ট গহ্বর যদি এর এক-তৃতীয়াংশের চেয়ে বড় হয়, তাহলে তা ফুসফুসকে সঠিকভাবে কাজ করতে বাধাপ্রাপ্ত করে। তখন সার্জারি আবশ্যক হয়ে পড়ে।

বর্তমান করোনা মহামারির কারণে বেশিরভাগ মানুষের ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দিচ্ছে। এমনকি করোনা সেরে গেলেও দেখা যাচ্ছে অনেকের ফুসফুসের অবস্থার উন্নতি হচ্ছেনা। তাই বর্তমানে আমাদের ফুসফুসের যত্ন নেওয়া আবশ্যক হয়ে পড়েছে। এজন্যে লক্ষণ দেখা দিলেই অতিসত্বর চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ফুসফুসের রোগ নিরাময় করা উচিত। অসংখ্য বাংলাদেশী প্রতি বছর সুচিকিৎসার জন্য ভারতীয় হাসপাতালগুলোতে পাড়ি জমান। ইয়াশোদা হসপিটালস হায়দ্রাবাদও এর ব্যতিক্রম নয়। ইয়াশোদা গ্রুপ দীর্ঘ ৩ দশক ধরে জনগণকে উন্নতমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে কাজ আসছে।

সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য সুস্থ্ ফুসফুসের গুরুত্ব অনস্বীকার্য হলেও এটি এমন একটি অঙ্গ যা পরিবেশ দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত হয়। তাই ফুসফুসকে সুস্থ রাখতে আমাদের সর্বদা সতর্ক ও সচেতন থাকতে হবে।

Yashoda Hopsitals

Recent Posts

Understanding and Managing Heart Failure: A Comprehensive Guide

Heart failure, also called congestive heart failure, is a condition that arises when the muscles…

5 months ago

Unlocking Heart Health: A Comprehensive Guide to PTCA

Percutaneous Transluminal Coronary Angioplasty, or PTCA, is a minimally invasive surgery that opens blocked or…

5 months ago

Understanding Ankle Ligament Reconstruction Surgery

Ankle ligaments are crucial cords that link foot bones to lower leg bones, ensuring stability…

6 months ago

Which cooking oil should you use?

Supermarkets today are flooded with a variety of cooking oils, each with different characteristics, such…

6 months ago

నోటి క్యాన్సర్‌: దశలు, లక్షణాలు, కారణాలు, చికిత్స మరియు నివారణ చర్యలు

మాట్లాడటానికి, తినటానికి మరియు ముఖం అందంగా కనిపించటానికి నోరే కీలకం. శరీర పోషణకు అవసరమైన ఆహారం, పానీయాలు లోపలికి చేరేది…

6 months ago

అండాశయ తిత్తి: రకాలు, కారణాలు, లక్షణాలు, వ్యాధి నిర్ధారణ మరియు చికిత్స పద్ధతులు

అండాశయ తిత్తులు అనేవి అండాశయాల లోపల లేదా వాటి ఉపరితలంపై ద్రవంతో నిండిన సంచి లాంటి నిర్మాణాలు. ఆడవారికి రెండు…

7 months ago